ঐতিহ্য নান্দনিকতায় অনন্য কান্তজির মন্দির
নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১২:৪৮ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৪ সোমবার
সংগৃহীত ছবি
ইতিহাস-ঐতিহ্য, নান্দনিকতা আর শৈল্পিক নির্মাণশৈলীর দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মন্দিরটির নাম কান্তজির মন্দির। কান্তজিউ মন্দির বা কান্তজির মন্দির বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপ-মহাদেশের মন্দির স্থাপত্যের একটি অপূর্ব নিদর্শন। ইন্দো-পারস্য ভাস্কর্য শৈলীতে নির্মিত দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির দেশের সবচেয়ে সুন্দর ধর্মীয় স্থাপনা।
শুধু নির্মাণশৈলীই নয়, উৎকর্ষতার জন্যেও এ মন্দিরের পরিচিতি বিশ্বজোড়া। ইটের তৈরি অষ্টাদশ শতাব্দীর এ মন্দির ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নিবেদিত। আমাদের দেশজুড়ে রয়েছে কত চমৎকার ভ্রমণের জায়গা! কান্তজির মন্দিরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সিদ্ধান্ত নিলাম দিনাজপুর যাওয়ার। আমি আর আমার সবসময়ের ভ্রমণসঙ্গী মাকে নিয়ে এক সকালে উপস্থিত হলাম মন্দির প্রাঙ্গণে। অবশ্য আগের দিন রাতের ট্রেনে পৌঁছে গিয়েছিলাম দিনাজপুর শহরে। ক্লান্তি দূর করার নিমিত্তে উঠলাম শহরের একটি হোটেলে। সেখানে ঘণ্টাকয়েক বিশ্রাম নিয়ে রওনা দিলাম কান্তজির মন্দির পানে।
কান্তজির মন্দির সম্পর্কে কিছু তথ্য দিই। মন্দিরটি দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নে টেপা নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির, যা দিনাজপুর শহর থেকে মাত্র ১৪ মাইল উত্তরে। মন্দিরটি হিন্দুধর্মের কান্ত বা কৃষ্ণের মন্দির হিসেবে পরিচিত, যা লৌকিক রাধাকৃষ্ণের ধর্মীয় প্রথা হিসেবে বাংলায় প্রচলিত।
আমরা শহর থেকে অনেকটা ভেতরে দুই ধারে গাছপালাবেষ্টিত সরু রাস্তা পার হয়ে কান্তজির মন্দির প্রাঙ্গণে যখন উপস্থিত হলাম, আমাদের ভেতরে প্রশান্তি বয়ে গেল। কান্তনগর নামে পরিচিতি এই এলাকার কোল ঘেঁষে বয়ে গেছে নদী, গাছপালা। সাঁওতাল ও শহুরে মানুষের মিশ্রণে এখানে গড়ে উঠেছে ভিন্নমাত্রার পরিবেশ। কথা হচ্ছিল এলাকার প্রবীণ মলয় সাহার সঙ্গে। তিনি বললেন, মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু করেন মহারাজ প্রাণনাথ রায় ১৭০৪ সালে; যদিও নির্মাণকাজ শেষ করেন তাঁর পোষ্যপুত্র রামনাথ রায়। টানা ৪৮ বছর কাজ করে চলার পর ১৭৫২ সালে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। শুরুতে মন্দিরের চূড়ার উচ্চতা ছিল ৭০ ফুট। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পের কারণে মন্দিরের চূড়াগুলো ভেঙে যায়। মহারাজা গিরিজানাথ মন্দিরের ব্যাপক সংস্কার করলেও চূড়াগুলোর সংস্কার করা হয়নি।
মন্দিরের বাইরের দেয়ালজুড়ে পোড়ামাটির ফলকে লেখা রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি। আমরা পদব্রজে ঘুরে দেখতে লাগলাম মন্দির প্রাঙ্গণ। ওপরের দিকে তিন ধাপে উঠে গেছে মন্দির। মন্দিরের চারদিকের সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়। মন্দির প্রাঙ্গণ আয়তাকার হলেও, পাথরের ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো ৫০ ফুট উচ্চতার মন্দিরটি বর্গাকার। মন্দিরের ভিত্তিমূলের দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট ৩ ইঞ্চি। ভূমি সমতল থেকে ভিত্তিভূমির উচ্চতা ৩ ফুট। মেঝেতে ওঠার জন্য দুই পাশে পাঁচধাপ বিশিষ্ট সিঁড়ি আছে। মন্দিরের ভবনের দেয়ালের দৈর্ঘ্য ৫২ ফুট এবং আয়তন ৩ হাজার ৬০০ ফুট। নিচতলার সব প্রবেশপথে বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে। দুটি ইটের স্তম্ভ দিয়ে খিলানগুলো আলাদা করা হয়েছে। স্তম্ভ দুটো খুবই সুন্দর এবং সমৃদ্ধ অলঙ্করণযুক্ত।
মন্দিরের পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় বারান্দা থেকে সিঁড়ি ওপরের দিকে উঠে গেছে। মন্দিরের নিচতলায় ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭টি দরজা-খিলান রয়েছে। তবে তৃতীয় তলায় রয়েছে মাত্র তিনটি করে। বেশ কয়েকটি ধাপ ও চূড়াবিশিষ্ট এই মন্দিরটির নির্মাণরীতি মধ্যযুগীয়। তবে কান্তজির মন্দির বিখ্যাত মন্দিরের গায়ের অপরূপ টেরাকোটার জন্য। মন্দিরে প্রায় ১৫ হাজারের মতো টেরাকোটা রয়েছে। আপনি মন্দিরের এপাশ-ওপাশ ঘুরে বিস্মিত হয়ে আবিষ্কার করবেন, এই টেরাকোটাগুলোর একটার সঙ্গে অন্যটার কোনো মিল নেই। বরং টেরাকোটার চিত্রগুলো একে একে বর্ণনা করছে একেক গল্প। এসব পোড়ামাটির ফলকে মধ্যযুগের শেষদিকে বাংলার সামাজিক জীবনের নানা কাহিনি বিবৃত রয়েছে। উৎকীর্ণ হয়েছে রামায়ণ, মহাভারত ও বিভিন্ন পুরাণের কাহিনির অংশ।
সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি এ চারটি শাস্ত্রীয় যুগের পৌরাণিক কাহিনিগুলো মন্দিরের চার দেয়ালে চিত্রায়িত। তাই বৈদিক চিত্রকাহিনি সংবলিত টেরাকোটায় আচ্ছাদিত মন্দিরটি দেখলে মনে হবে এ যেন চার খণ্ডে শিল্পখচিত এক পৌরাণিক মহাকাব্যের দৃশ্যমান উপস্থাপনা। মন্দিরের টেরাকোটা আপনাকে কখনো নিয়ে যাবে মধ্যযুগীয় বাংলায়। একটা স্থাপত্য আপনার ভেতরে কতখানি প্রভাব ফেলতে পারে তা কান্তজির মন্দিরে না গেলে ধারণা করতে পারবেন না। স্থাপত্য রীতি, গঠনবিন্যাস, শিল্পচাতুর্য মন্দিরটির সামগ্রিক দৃশ্য এতই মাধুর্যমণ্ডিত করে তুলেছে যে এর চেয়ে সুন্দর, নয়নাভিরাম মন্দির বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি নেই।
- জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ জুনিয়র টাইগ্রেসদের
- হার দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু টাইগ্রেসদের
- কফি পানের অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না অনেকেই
- দাঁড়াতে পারছেন না রাশমিকা
- রিজার্ভ বেড়ে ফের ২০ বিলিয়নের ঘরে
- এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা
- পঞ্চগড়ে বেড়েছে শীতের তীব্রতা, বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ
- ট্রেন বন্ধ শুনে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা, রাজশাহী স্টেশনে ভাঙচুর
- ট্রেনের যাত্রা বাতিল হলে টিকিটের টাকা ফেরত পাবেন যাত্রীরা
- নরসিংদীতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে হত্যা, আহত মা
- ‘খালেদা জিয়া আগের চেয়ে ভালো আছেন, অচিরেই দেশে ফিরবেন’
- বায়ুদূষণে আজও শীর্ষে ঢাকা
- রেলের টিকিটেই বিআরটিসি বাসে গন্তব্যে যেতে পারবেন যাত্রীরা
- বন্ধ হলো সারাদেশে ট্রেন চলাচল
- রিক-এর ‘আন্তঃপ্রজন্ম স্বনির্ভর ক্লাব’ প্রকল্প উদ্বোধন
- বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বার্তা ঢাকা-দিল্লির
- আগামী ৩ দিন যেমন থাকবে আবহাওয়া
- রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক আজ
- টস হেরে ফিল্ডিংয়ে টাইগ্রেসরা
- আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জয় টাইগ্রেসদের
- ধানমন্ডি লেকের পাড়ে গাছে গাছে ঝুলছে বুককেস!
- সিরিজে ঘুড়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আজ মাঠে নামবে টাইগ্রেসরা
- এপকম হিরো অ্যাওয়ার্ডে নবপ্রভাত ফাউন্ডেশন পুরস্কৃত
- ম্যাচসেরা হয়ে যা বললেন অধিনায়ক জ্যোতি
- মহিলা আওয়ামী লীগের ৫ নেত্রী গ্রেপ্তার
- যেসব এলাকায় বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
- রাজনীতিতে যোগ দিলেন ডা. তাসনিম জারা
- শীতকালেও সানস্ক্রিন: কতবার এবং কীভাবে ব্যবহার করবেন?
- শেষ ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
- রেকর্ডগড়া জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের মেয়েদের